বই: দ্য গুড মুসলিম
লেখক: তাহমিমা আনাম
প্রকাশনী: প্রথমা
“দ্য গুড মুসলিম” বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ইংরেজি ভাষায়, ২০১১ সালে। লেখিকার প্রথম বই “আ গোল্ডেন এজ” এর সিক্যুয়াল এটি। লেখিকা তাহমিমা আনাম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইংল্যান্ডের স্থায়ী নাগরিক; পেয়েছেন কমলওয়েলথ রাইটার্স পুরষ্কার।
বইটির কাহিনী আবর্তিত ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীকালীন সময়ে এক পরিবারের পটভূমিতে। একটি যুদ্ধ একজন মানুষের মনোজগতে কি অদ্ভুত প্রভাব ফেলে.. মানুষ যে কি প্রচণ্ড জটিল অথচ একইসাথে কতো অসহায় একটা সৃষ্টি.. তারই বয়ান এ উপন্যাস।
বইটির মূল চরিত্র মায়া আর তার ভাই সোহেল। সোহেল যুদ্ধপূর্ববর্তী সময়ে মুক্তমনা, আধুনিক, শিল্পরসিক, বিপ্লবী মননের হলেও একাত্তরে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করবার পর নিজেকে গুটিয়ে ফেলেন গন্ডির ভেতর.. আমূল পরিবর্তিত হয় তার ভেতর ও বাহির.. আত্মপ্রকাশ করেন ধার্মিক ও আল্লাহর অনুগত এক খেদমতকারী হিসেবে।
সোহেলের এ আকস্মিক পরিবর্তন মেনে নিতে পারে না মায়া। অসাম্প্রদায়িক মানবতাবাদী আদর্শে ঘেরা একটা জীবন চায় সে সোহেলের জন্য.. যা তাদের দুজনেরই পরম আকাঙ্ক্ষিত ছিলো এক সময়।
কিন্তু সোহেলকে তার পূর্বসত্তায় ফেরাতে মায়া ব্যর্থ হয়, অভিমানে স্বেচ্ছানির্বাসনে চলে যায় গ্রামে গরীব দুঃখীদের কাছে চিকিৎসাসেবা পৌঁছানোর জন্য।
এরপর প্রায় এক দশক পর পরিবারে ফিরে এসে মায়া দেখে কিছুই বদলায়নি বরং সময়ের ফেরে আরো দৃঢ় হয়েছে সোহেলের প্রবল ধর্মবিশ্বাস ও ধর্মচর্চা.. যার প্রভাবে নিজের একমাত্র সন্তানকে স্কুলে পাঠাতেও এখন ঘোর আপত্তি তার!
এক দশক আগে সোহেলের মানসিকতা পরিবর্তনের জন্য সংগ্রামে হেরে গেলেও, মায়া প্রস্তুত নেয় নতুন এক সংগ্রামের জন্য.. এবার সোহেলের সন্তানের জন্য।
মায়া কি পারবে সোহেলের সন্তানকে স্বাভাবিক জীবন দিতে? অথবা, মানবতাবাদে বিশ্বাসী,মানুষের জন্য কাজ করা মায়া নাকি ধর্মে অবিচল আস্থাবান সোহেল..কেই বা “ভালো মুসলমান”? বিপ্লব থেকে ধর্ম.. সোহেলের পুরোই অন্য মেরুর সম্পূর্ণ বিপরীত আদর্শ ধারণের কারণ কি ছিলো?
এ প্রশ্নগুলোর জবাব জানতে হলে পড়তে হবে “দ্য গুড মুসলিম” বইটি।
আমাদের স্টেরিওটাইপ করা ধারণাগুলোকে একটু অন্য আঙ্গিকে ভেবে দেখার রসদ অবশ্যই যোগাবে সুখপাঠ্য এ বইটি!
হ্যাপি রিডিং!