আজকে বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় বিশ্বকাপে টিকে থাকার লড়াইয়ে মেসির আর্জেন্টিনা মুখোমুখি হবে ক্রোয়েশিয়ার। আর্জেন্টিনা আইসল্যান্ডের সাথে তাদের প্রথম ম্যাচে ড্র করে খাদের কিনারায় চলে এসেছে, আজকের ম্যাচে হেরে রাশিয়া বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়ে যাবে দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ানরা।
আইসল্যান্ডের বিপক্ষের ম্যাচে প্রথমার্ধেই অ্যাগুয়েরোর গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। কিন্তু আইসল্যান্ডের আলফ্রেড ফিনবোগাসনের গোলে সমতায় ফিরে আইসল্যান্ড। বাকি ম্যাচে আর্জেন্টিনা একের পর এক আক্রমণ সাজিয়ে গেলেও আইসল্যান্ডের রক্ষণ ভেদ করে গোল করতে পারেনি।
ম্যাচের ৬৪ মিনিটে আর্জেন্টিনা সামনে এগিয়ে যাওয়ার একটি সুবর্ণ সুযোগ আসে। আইসল্যান্ড ডিফেন্ডার ম্যাগনুসন আর্জেন্টিনার মেজাকে ডিবক্সে ফাউল করলে আর্জেন্টিনা পেয়ে যায় একটি পেনাল্টি। পেনাল্টি নিতে এগিয়ে আসে আর্জেন্টাইন সুপারস্টার মেসি। কিন্তু তার নেয়া শটটি ঠেকিয়ে দেন গোলকিপার হলডোরসন। তারপর বাকি ম্যাচে আর্জেন্টিনা একের পর এক চেষ্টা করে গেলেও আইসল্যান্ডের জালে বল পাঠাতে ব্যর্থ হয়।
স্বভাবতই আর্জেন্টিনা ভক্ত-সমর্থকরা ও মিডিয়া মেসিকেই আর্জেন্টিনার ড্র-এর জন্য দোষারোপ করতে থাকে। কিন্তু ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে আর্জেন্টিনা কোচ সাম্পাওলি মেসির পক্ষে কথা বলেছেন। সাম্পালির চোখে বব্যর্থতার দায় শুধু মেসির উপর বর্তায় না।
“যখন আর্জেন্টিনা জিততে পারে না আমরা সবাই মেসিকে দায়ী করা শুরু করি। আমার মনে আর্জেন্টিনার মানুষদের চিন্তাধারা এরকমই। আইসল্যান্ডের বিপক্ষে জিততে না পারা আমাদের জন্য খুবই হতাশাজনক। কিন্তু আমাদের দলটা শুধু একজনের না। আমরা ৪০ জন একত্রে এসেছি বিশ্বকাপে। সাফল্য এবং ব্যর্থতার দায় আমাদের ভাগাভাগি করে নিতে হবে।”
আর্জেন্টিনা কোচ সাম্পাওলি
নাইজেরিয়ার সাথে তাদের প্রথম ম্যাচ ২-০ ব্যবধানে জিতে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থাকা ক্রোয়েশিয়া দল আর্জেন্টিনার মত এক কঠিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে মাঠে নামার জন্য প্রস্তুত। ক্রোয়েশিয়া কোচ ডালি আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ম্যাচে তাদের কিছু হারাবার নেই বলে মনে করছেন।
“আর্জেন্টিনার বিপক্ষের ম্যাচ আমাদের জন্য বিশ্বকাপের সবথেকে সহজ ম্যাচ হতে চলেছে, কারণ আমরা ৩ পয়েন্ট হাতে রেখে এক বড় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলতে যাচ্ছি। আমাদের হারাবার কিছু নেই। ম্যাচ শুরুর আগে আমি আমার খেলোয়াড়দের শুধু ম্যাচটিকে উপভোগ করার কথাই বলব।”
ক্রোয়েশিয়া কোচ ডালি
আর্জেন্টিনা এখন পর্যন্ত চারবার মাঠে নেমেছে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে। যার মধ্যে শুধুমাত্র ২০০৬ সালের ফ্রেন্ডলি ম্যাচে জয়ী হয়েছিল ক্রোয়েশিয়া, বাকি সব ম্যাচ জিতেছে আর্জেন্টিনা। ২০০৬ সালের সেই ম্যাচটিতেই আর্জেন্টিনার হয়ে প্রথমবারের মত গোল করেছিলেন লিওনেল মেসি।
আর্জেন্টিনা ও ক্রোয়েশিয়া বিশ্বকাপে আগে মুখোমুখি হয়েছিল একবার। ১৯৯৮ বিশ্বকাপের সেই ম্যাচে আর্জেন্টিনা ১-০ গোলে জিতেছিল। র্যাঙ্কিং-এ ২০তম ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে সর্বশেষ ২০১৪ সালের ফ্রেন্ডলি ম্যাচে ২-১ গোলে জয়ী হয়েছিল আর্জেন্টিনা। তাই আজকের ম্যাচে ফেভারিট হিসেবেই মাঠে নামবে মেসিবাহিনী।
আর্জেন্টিনার এই বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা আক্রমণভাগ নিয়ে দল সাজিয়েছে। মেসি, অ্যাগুয়েরো, দিবালা, হিগুয়েনদের মত ইউরোপের শীর্ষস্তরের দলগুলোতে দাপিয়ে বেড়ানো এসব খেলোয়াড়দের উপরই আজকের ম্যাচে তাকিয়ে থাকবে আর্জেন্টিনা সমর্থকরা। আর অপরদিকে মড্রিচ, রাকিতিচ, কোভাচিচ, পেরিসিচদের নিয়ে সাজানো ক্রোয়েশিয়ার মিডফিল্ড বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা। আজকের ম্যাচটি তাই হতে যাচ্ছে আর্জেন্টিনার আক্রমণভাগ ও ক্রোয়েশিয়ার মাঝমাঠের খেলোয়াড়দের লড়াই।
প্রথম ম্যাচের আগেই নিজের একাদশ ঘোষনা করে দিয়েছিলেন সাম্পাওলি। কিন্তু এবার সেরকমটা করেননি তিনি। কিন্তু সাম্পাওলি আর্জেন্টিনা কোচ হিসেবে কখনোই পরপর ২ ম্যাচে একই একাদশ মাঠে নামাননি। কোচ ডালি ক্রোয়েশিয়া একাদশে কিছু পরিবর্তনের আভাস দিয়েছেন।