সিরিজ রিভিউঃ লা কাসা দি পাপেল / মানি হাইস্ট

লা কাসা দি পাপেল / মানি হাইস্ট
ক্রিয়েটরঃ আলেক্স পিনা
Imdb রেটিংঃ ৮.৭
ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৯.৬

লা কাসা দি পাপেল মানে হচ্ছে দি পেপার হাউস, অর্থাৎ যেখানে টাকা প্রিন্ট করা হয়। আমরা সবাই কম বেশি টাকা বা ব্যাংক ডাকাতির কথা শুনেছি। তবে কেউ কি শুনেছি টাকশালের ডাকাতি???

এই দুঃসাহসিক ডাকাতির মূলহোতা একজন ক্রিমিনাল মাস্টার মাইন্ড যাকে সবাই প্রফেসর নামেই চিনে। টাকার অঙ্কে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এই ডাকাতির জন্য প্রফেসর আট জনকে খুঁজে বের করেন। এমন আট জন যাদের জীবনে হারাবার আর কিছু নেই। আর প্রত্যেকেরই রয়েছে নিজস্ব কোনো দক্ষতা।

তাদের অভিযানের লক্ষ্য হচ্ছে লা ফাব্রিকা নাসিওনাল দি মানেদা আই তিম্ব্রে বা দি রয়্যাল মিন্ট অফ স্পেইন। কিন্তু তারা সেখান থেকে টাকা চুরি করতে চায় না। বরং তাদের পরিকল্পনা হচ্ছে যতক্ষণ সম্ভব টাকশালের ভিতরে থাকা এবং ২৪০০ মিলিয়ন ইউরো প্রিন্ট করা। ( ইসসসস আমি যদি আট জনের একজন হতে পারতাম!!!)

প্রফেসরের পরিকল্পনাটি ছিল একেবারে নিখুঁতভাবে তৈরি। প্রফেসর তার জীবনের অনেকটা সময় ব্যয় করেন প্লানটি তৈরি করতে এবং বাকি আটজনের সাথে বেশ কয়েক মাস সময় ব্যয় করেন প্রস্তুতি গ্রহণ করার জন্য । প্রফেসর এমনভাবে পরিকল্পনাটি সাজিয়েছেন যেন তারা যেকোনো ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকেন।

কিন্তু তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় রাকুল মুরিল্ল, হেড অফ দি পুলিশ ডিপার্টমেন্ট। প্রফেসর ও তাঁর দলকে ধরতে ও তাদের পরিকল্পনাকে নস্যাৎ করতে বদ্ধপরিকর তিনি। প্রফেসরের সাথে রাকুলের সাইকোলোজিকাল যুদ্ধ, তাদের মধ্যকার চলমান বুদ্ধির লড়াই, তাদের মধ্যকার কথোপকথন এই সিরিজের অন্যতম উপভোগ্য দিক।

সাধারন মানুষকে ধাঁধায় রাখা এবং তাদের মন জয় করা প্রফেসরের পরিকল্পনারই অংশ ছিল। আর এপিসোডগুলো দেখার সময় দর্শকদেরও একই অনুভূতির সম্মুখীন হতে হবে। শুরুতেই দর্শক হিসেবে আপনি বুঝতে পারবেন কে ভাল আর কে খারাপ। কিন্তু তারপরও আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না যে আপনি কাকে সমর্থন করছেন?

যতই এপিসোড সামনের দিকে চলতে থাকে ততই গল্পের কাহিনী জটিল হতে থাকে। গল্পে কিছুক্ষণ পর পর আসতে থাকে ফ্ল্যাশব্যাক। যা থেকে কাহিনি এবং চরিত্রগুলো সম্পর্কে আরও ভাল ধারণা পাওয়া যায়। নিয়মিতই প্রফেসরের দলের সাথে চলতে থাকে পুলিশের শো ডাউন। প্রতিবারই মনে হবে এই বুঝি ধরা পরে গেল, এই শেষ ???

সিরিজটি তৈরি করেছে স্পেনের আট্রেস মিডিয়া। ২০১৭ সালের ২ মে স্পেনের অ্যান্টেনা ৩ চ্যানেলে সিরিজটির প্রিমিয়ার হয়। স্প্যানিশ ভাষায় তৈরি এই সিরিজটিকে পরে নেটফ্লিক্স একইবছরের ২৫শে ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিকভাবে রিলিজ দেয়। নেটফ্লিক্স তাদের মত করে এক সিজনকে দুই ভাগে ভাগ করে ১৫ টা এপিসোডে।

চলতি বছরের এপ্রিল মাসে নেটফ্লিক্স এই সিরিজটিকে ৩য় সিজনের জন্য রিনিউ করেছে। খুব সম্ভবত ২০১৯ সালে পরবর্তী সিজনটি প্রচারিত হবে।(আমি চাই তারা যেন এমন ১০টা সিজন করে )

প্রত্যেক এপিসোডই আমার কাছে মনে হয়েছে গুপ্তধনের মত। শুধু একটা এপিসোড দেখলে কখনোই মন ভরবে না। পরিশেষে বলতে পারি যে এই সিরিজের প্রতিটি এপিসোডেই আপনি পাবেন শ্বাসরুদ্ধকর উত্তেজনা। যাদের ক্রাইম, থ্রিলার ,সাসপেন্স ভাল লাগে তাদের জন্য এই সিরিজটি অপরিহার্য। আশা করি দেখবেন। এই ব্যাপারে আপনাদের নিশ্চয়তা দিতে পারি যে সিরিজটি দেখলে আপনার সময় বৃথা যাবে না।

Post Author: RK Desk

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *