বিশ্বকাপে না খেলা সেরা ৫ ফুটবলার

আর মাত্র ২০ দিনের অপেক্ষা। শুরু হতে যাচ্ছে বিশ্বের কোটি কোটি ফুটবল ভক্তের প্রাণের আসর ফুটবল বিশ্বকাপ। বিশ্বের প্রতিটি ফুটবলারের স্বপ্ন বিশ্বকাপে নিজ দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা। কিন্তু ফুটবলের সবথেকে বড় উৎসবে অংশ নেয়ার সৌভাগ্য সবার হয় না। আজকে এমনই ৫জন বিখ্যাত ফুটবলারের কথা আপনাদের জানাবো, যাদের বিশ্বকাপে না খেলাটাকে ফুটবল বোদ্ধারা ও সমর্থকরা বিশ্বকাপেরই দুর্ভাগ্য বলে মনে করে।

জর্জ বেস্টঃ

জর্জ বেস্ট

“Pele good, Maradona better, George Best”

এভাবেই নিজেকে মূল্যায়ণ করতেন ৬০-এর দশকের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে খেলা কিংবদন্তি উইঙ্গার জর্জ বেস্ট। সর্বকালের অন্যতম সেরা উইঙ্গার ইউনাইটেডের হয়ে সম্ভাব্য সবকিছুই জয় করেছেন। কিন্তু তাঁর জাতীয় দল নর্দান আয়ারল্যান্ডের হয়ে তাঁর রেকর্ড অনেক বিবর্ণ। ১২ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে জাতীয় দলের হয়ে তিনি খেলেছেন মাত্র ৩৭টি ম্যাচ। গোল করেছেন ১২টি। ১৯৮২ সালে নর্দান আয়ারল্যান্ড বিশ্বকাপে খেলার জন্য কোয়ালিফাই করলে বেস্ট-এর সামনে শেষ সুযোগ আসে বিশ্বকাপে খেলার। কিন্তু ৫ বছর ধরে জাতীয় দলে সুযোগ না পাওয়া বেস্টকে জাতীয় দলে নিতে অস্বীকৃতি জানান কোচ বিলি বিংহাম। ১৯৬৮ সালের ব্যালন ডি অর জয়ী এই ফুটবলারের বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন তাই অধরাই থেকে যায়।

জর্জ উইয়াহঃ

জর্জ উইয়াহ

জর্জ উইয়াহকে লাইবেরিয়ার ইতিহাসের সবথেকে সফল ফুটবলার বলে সবাই এক বাক্যে মেনে নেয়। অনেকের মতে তিনিই আফ্রিকার সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ফুটবলার। এসি মিলান, পিএসজি ও মোনাকোতে খেলা এই স্ট্রাইকার ১৯৯৫ সালে একইসাথে  ব্যালন ডি অর এবং আফ্রিকার বর্ষসেরা ফুটবলার-এর পুরষ্কারে ভূষিত হন। বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে তাঁর অসংখ্য কীর্তি থাকা স্বত্বেও, উইয়াহ কখনো খেলতে পারেননি বিশ্বকাপে। ফুটবল থেকে অবসর নেয়ার পরে উয়াহ জড়িয়ে পড়েন লিবিয়ার রাজনীতিতে। ২০১৮ সালের লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করে তিনি হয়ে যান বিশ্বের একমাত্র ব্যালন ডি আর জয়ী প্রেসিডেন্ট।

কাজুইয়োশি মিউরাঃ

কাজুইয়োশি মিউরা

৫১ বছর বয়সী এই জাপানি ফুটবলার কিছুদিন আগেই পত্রিকায় শিরোনাম হয়েছিলেন সবথেকে বেশি বয়সী পেশাদার ফুটবলারের রেকর্ড গড়ার মাধ্যমে। ক্লাব পর্যায়ে এখনো দাপটের সাথে খেলে গেলেও, ২০০০ সালেই এই স্ট্রাইকার অবসর নিয়ে নেন জাতীয় দল থেকে। জাপানের ইতিহাসের ২য় সর্বোচ্চ গোলদাতা মিউরা জাতীয় দলের হয়ে ৮৯ ম্যাচে ৫৫টি গোল করেন। ১৯৯৮ সালে জাপানের বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। বাছাইপর্বে ১৪ গোল করেন মিউকা। তারপরও বিশ্বকাপের দলে তাঁকে রাখা হয়নি। বর্তমানে জাপানের ২য় বিভাগের দল ইয়োকোহামা এফসির হয়ে খেলছেন তিনি।

রায়ান গিগসঃ

রায়ান গিগস

১৯৯৪ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত, প্রায় ২৫ বছর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মাঝ মাঠে দাপিয়ে বেড়ান রায়ান গিগস। কিন্তু ইউনাইটেডের ইতিহাসে সবথেকে বেশি ম্যাচ খেলা এই মিডফিল্ডার জাতীয় দল ওয়েলস-এর হয়ে কখনো কোনো বড় টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারেননি। ২০০৭ সালে জাতীয় দল থেকে অবসর নেয়া গিগস ওয়েলসকে ৬৪ বার আন্তর্জাতিক ম্যাচে প্রতিনিধিত্ব করেন। ২০১৮ সালে তাঁকে ওয়েলস জাতীয় দলের কোচ হিসেবে নিয়োগ করা হয়।

আলফ্রেডো ডি স্টেফানোঃ

আলফ্রেডো ডি স্টেফানো

ফুটবলের সর্বকালের সেরার তালিকায় উপরের দিকে যে নামটি সবসময় দেখা যায় তা হল আলফ্রেডো ডি স্টেফানো। আর্জেন্টিনায় জন্মগ্রহণ করা এই কিংবদন্তি আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়া ও স্পেন, তিনটি জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। আর্জেন্টিনার হয়ে ৩১ ম্যাচে করেছেন ২৩টি গোল। রিয়াল মাদ্রিদ-এর হয়ে জিতেছেন ৫টি ইউরোপিয়ান কাপ ও ৮টি লীগ টাইটেল। ১৯৪৭ সালে আর্জেন্টিনার হয়ে জিতেছেন কোপা আমেরিকা। কোচিং করিয়েছেন বোকা জুনিয়রস, রিভার প্লেট ও রিয়াল মাদ্রিদে। তাঁর বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের একমাত্র অপূর্ণতা হিসেবে রয়ে গেছে কখনো বিশ্বকাপে না খেলতে পারা।

 

 

 

 

Post Author: Ashfaq Niloy

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *